Shikhoapp

বাংলাদেশে ই-কমার্স সেক্টর ইতিমধ্যে বাজিমাত করে দিয়েছে। প্রতিনিয়ত ব্যবসায়ীরা তাদের লোকাল বিজনেস গুলোকে অনলাইনে শিফট করছে আর নতুন ব্যবসায়ীরা পাচ্ছে অকল্পনীয় সুযোগ। নতুন এই সুযোগ গুলো সৃষ্টি হচ্ছে ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম গুলোর কল্যাণেই। 

ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম – যা আর কিছুই না একটি ওয়েবসাইট, অভাবনীয় revulation নিয়ে এসেছে আমাদের মাঝে। ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করা খুব সহজ একটা ব্যাপার। হ্যাঁ কিছু জটিলতা অবশ্য রয়েছে, তবে সেসব জটিলতা কাটিয়ে উঠার জন্য রয়েছে হাজারটা সমাধান। 

আপনাকে আজ হোক কিংবা কাল, ব্যবসাকে অনলাইনে আনতেই হবে। সকল লোকাল ব্যবসায়ী ও নতুন উদ্দ্যোক্তাদের একটা বিষয়ে খুব ভালো ভাবে জেনে-বুঝে নিতে হবে যে, অনলাইনে ব্যবসা করতে ওয়েবসাইটের বিকল্প নেই। একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট ব্যবসার marketing, customer grabbing, trust building থেকে শুরু করে sales নিয়ে আসা পর্যন্ত মেজর ভুমিকা পালন করে। 

আর, ব্যবসায়ের এতো গুরুত্বপূর্ণ একটা উপাদান (পড়ুন ওয়েবসাইট) তৈরি করার ক্ষেত্রে সেরা সিদ্ধান্ত নেয়ার পাশাপাশি সেরা আউটপুট প্রয়োজন হবে। একটি ওয়েবসাইটের পার্ফেক্ট আউটপুট তখনই আসবে যখন ই-কমার্স ওয়েবসাইট ডিজাইন হবে খুব নান্দনিক আর এতে করে ভিজিটর ওয়েবসাইটে এসে সন্তুষ্ট থাকার মধ্য দিয়েই আপনার সম্ভব্য ক্রেতা প্রকৃত ক্রেতাতে পরিণত হয়। 

তাহলে বুজতে পারছেন একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট ডিজাইন কত বেশি গুরুত্বপূর্ণ? কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে ই-কমার্স ওয়েবসাইট ডিজাইন করবেন কিভাবে? কোন প্ল্যাটফর্মের সাহায্যে? নিজে করবেন নাকি কোনো প্রোফেশনালকে দিয়ে করাবেন? এমনই বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়েই আলোচনা ও সমস্যার সমাধান রয়েছে এই আর্টিকেলে। 

ই-কমার্স ওয়েবসাইট বানানোর উপায় সমূহ 

যেকোনো ওয়েবসাইট তৈরি করতে প্রয়োজন ওয়েব ডিজাইনার ও ডেভেলপার। তবে বাস্তবিক অর্থে একজন ডেভেলপার Hire করে কাজটি করিয়ে নেয়া অনেক সময়সাপেক্ষ ব্যবহুল। Mern Stack দিয়ে একটি ওয়েবসাইট দাড় করানোর ক্ষেত্রে সর্বনিম্ম ৫০,০০০ টাকা খরচ হয়েই যায়। এক্ষেত্রে একজন নতুন উদ্যোক্তার বেশ সমস্যা হয়ে যায় খরচ ব্যবস্থাপনায়। 

এমতাবস্থায় ভাবতে হবে সমসমান বিকল্প। আর সেই বিকল্প খুজতেই পাওয়া যায় CMS এর খাজানা।  CMS যা হলো একটি কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, যেখানে খুব সহজে কোনো কোডিং knowledge ছাড়াই ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করে ফেলা সম্ভব অল্প কিছু সময়ের মধ্যেই। 

CMS এর কল্যাণে বেশ কিছু প্ল্যাটফর্ম আমাদের জন্য রেডি আছে ই-কমার্স ওয়েবসাইট ডিজাইন ও কাস্টমাইজেশনের মাধ্যমে নানন্দিক ই-কমার্স স্টোর তৈরি করার জন্য। এগুলোর মধ্যে জনপ্রিয় কয়েকটি হলো: 

  • WooCommerce (WordPress)
  • Shopify
  • Magento
  • BigCommerce
  • Wix eCommerce
  • Squarespace
  • PrestaShop
  • OpenCart ইত্যাদি 

এগুলোর মধ্যে ফ্রী এবং পেইড সব গুলোই রয়েছে। তবে সবচেয়ে সহজ ও একদম বিনামূল্যে পাওয়া যায় এমন বেস্ট কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম প্ল্যাটফর্ম হলো WordPress. 

এই আর্টিকেলটির মধ্যে জানাবো কিভাবে ই-কমার্স ওয়েবসাইট ডিজাইন ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে খুব সহজে করা যায়। আর সব শেষে থাকবে একটা বিশেষ নোটিশ, So, stay turn.. 

ই-কমার্স ওয়েবসাইট ডিজাইন ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে যেভাবে করা যায়

WordPress দিয়ে ই-কমার্স ওয়েবসাইট বানানো বর্তমান সময়ে বেশ সহজ এবং কার্যকরী। WordPress একটি ফ্রি কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (CMS), যা WooCommerce প্লাগইনের মাধ্যমে ই-কমার্স ফিচার যুক্ত করে ওয়েবসাইটকে একটি পূর্ণাঙ্গ অনলাইন স্টোরে রূপান্তরিত করে। নিচে ধাপে ধাপে WordPress দিয়ে ই-কমার্স ওয়েবসাইট বানানোর প্রক্রিয়া আলোচনা করা হলো:

ডোমেইন – হোস্টিং কেনা 

ই-কমার্স ওয়েবসাইটের জন্য প্রথমে একটি Domain Name এবং Hosting Service ক্রয় করতে হবে। Domein Name হলো আপনার ওয়েবসাইটের ঠিকানা (যেমন: yourshopname.com)। অন্যদিকে হোস্টিং হলো সেই জায়গা যেখানে আপনার ওয়েবসাইটের সকল ফাইল ও ডেটা সংরক্ষিত থাকবে।

কিছু জনপ্রিয় হোস্টিং সার্ভিস:

  • Bluehost
  • SiteGround
  • HostGator

WordPress ইনস্টল করা

হোস্টিং কেনার পর, WordPress ইনস্টল করতে হবে। বেশিরভাগ হোস্টিং প্রোভাইডার এক-ক্লিক WordPress ইনস্টলেশন সুবিধা দেয়। সুতরাং, Control Panel (cPanel)-এ লগ ইন করে WordPress ইনস্টল করে নিতে পারবেন। 

WooCommerce প্লাগইন ইনস্টল করা

এক ক্লিকে WordPress-এ ওয়েবসাইট তৈরি করার পর ই-কমার্স ফিচার যুক্ত করার জন্য WooCommerce প্লাগইন ব্যবহার করা হয়। এটি একটি ফ্রি প্লাগইন যা ই-কমার্সের প্রয়োজনীয় সমস্ত ফিচার প্রদান করে। WooCommerce ইনস্টল করার ধাপ গুলো হলো:

  • WP Dashboard থেকে Plugins > Add New অপশনে ক্লিক করুন।
  • সার্চ বক্সে “WooCommerce” লিখে সার্চ করুন।
  • WooCommerce প্লাগইনটি খুঁজে পেয়ে “Install Now” 
  • তারপর “Activate” বাটনে ক্লিক করুন।

ব্যাস, আপানার ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করা হয়ে গেছে, খুব সহজ না? 

ই-কমার্স ওয়েবসাইট ডিজাইন

WooCommerce অ্যাক্টিভেট করার পর ই-কমার্স ওয়েবসাইট ডিজাইন করতে হবে। এক্ষেত্রে যে তথ্য গুলো প্রয়োজন হবে তা হলো:

Store Details: আপনার স্টোরের নাম, ঠিকানা, ব্যবসার ধরন।

Payment: পেমেন্ট মেথড সিলেক্ট করতে হবে, যেমন ssl commerce, bkash মার্চেন্ট।

Shipping: পণ্য শিপিংয়ের জন্য ডেলিভারি অপশন এবং চার্জ নির্ধারণ করতে হবে।

Products: আপনার পণ্যের পরিমাণ ও মূল্য নির্ধারণ করতে হবে।

Theme: ল্যান্ডিং পেজসহ অন্যান্য গুরুত্বপুর্ণ পেজ এর জন্য একটি থিম বাছাই করতে হবে। 

উল্লেখ্য যে, ই-কমার্স ওয়েবসাইট ডিজাইনের জন্য থিম খুব গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে WooCommerce এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং মোবাইল রেসপন্সিভ থিম বাছাই করতে হবে। মজার ব্যাপার হলো WordPress-এ প্রচুর ফ্রি এবং পেইড থিম আছে। নিজের পছন্দ মত করে বাছাই করতে পারবেন। 

স্টোরে পণ্য যুক্ত করা

ওয়ার্ডপ্রেসে WooCommerce সেটআপ হওয়ার পর আপনার ই-কমার্স ওয়েবসাইটে পণ্য যুক্ত করতে হবে। পণ্য যুক্ত করার ধাপগুলো হলো:

  • ড্যাশবোর্ড থেকে Products > Add New এ যান।
  • পণ্যের নাম, বর্ণনা, মূল্য, এবং ছবি যুক্ত করুন।
  • পণ্য স্টক স্ট্যাটাস, মাপ, রঙ, শিপিং অপশন ইত্যাদি নির্ধারণ করুন।
  • সব তথ্য পূরণ করার পর “Publish” এ ক্লিক করুন।

পেমেন্ট গেটওয়ে সেটআপ করা

ই-কমার্স ওয়েবসাইটে পেমেন্ট প্রসেসিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কেননা এটার মাধ্যমেই আপনার পণ্য গুলোর দাম পরিশোধ করা হবে। ওয়ার্ডপ্রেসের WooCommerce বিভিন্ন পেমেন্ট গেটওয়ে সাপোর্ট করে, যেমন:

  • Bkash, Nagad, Rocket Payment Getway 
  • SSL Commerce
  • Debit or Credit Cards
  • Direct Bank Transfer
  • Cash on Delivery

পেমেন্ট গেটওয়ে সেটাপ করতে WooCommerce > Settings > Payments এ গিয়ে পেমেন্ট গেটওয়ে সিলেক্ট করে দিবেন। ব্যাস, খুবই সিম্পল। 

শিপিং সেটাপ ও কাস্টমাইজেশন

এবার চলে এসেছি ই-কমার্স ওয়েবসাইট ডিজাইনের একদম শেষ ধাপে। এখানে শিপিং অপশন সেটআপ করতে হবে। এক্ষেত্রে যা করবেন তা হলো:

  • WooCommerce > Settings > Shipping এ যান।
  • শিপিং জোন, শিপিং রেট, এবং ডেলিভারি মেথড নির্ধারণ করুন।

That’s all. আপনি সফলভাবে একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট ডিজাইন ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে করে ফেলেছেন। WordPress দিয়ে WooCommerce প্লাগইন ব্যবহার করে ই-কমার্স ওয়েবসাইট বানানো অত্যন্ত সহজ। এক্ষেত্রে শুধু জানতে ও বুঝতে হবে কখন কোন কাজটি কিভাবে করতে হয়। এখানে প্রয়োজন নেই কোনো কোডিং দক্ষতা, কেবল ড্রপ এন্ড ড্রাগের মাধ্যমেই সম্পূর্ণ হয়ে যাবে ই-কমার্স ওয়েবসাইট। 

ই-কমার্স ওয়েবসাইট ডিজাইন কোর্স  

যেমনটা আর্টিকেলের একদম শুরুতে বলেছিলাম, আর্টিকেলে শেষে রয়েছে একটা বিশেষ নোটিশ আর সেটি হলো:  আপনি যদি ই-কমার্স ওয়েবসাইট ডিজাইন ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে করুন খুব সহজে করে নেয়া শিখতে চান আরো ভালোভাবে এবং দক্ষতার সাথে তবে আপনার প্রয়োজন একটি পূর্ণাঙ্গ গাইডলাইন। 

শিখতে হবে প্রতিটি স্টেপ ধাপে ধাপে। এখানে উল্লেখ্যিত প্রতিটা স্টেপ কেবল নির্দেশনা, কিভাবে এই নির্দেশনা গুলোকে অনুসরণ করে নিজেই নিজের ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করে ফেলতে পারবেন অল্প সময়ে সে বিষয়ে সম্পূর্ণ কোর্স নিয়ে আসছে Shiko App. আমাদের এই কোর্সটিতে একদম হাতে ঘড়ি থেকে শুরু করে প্রফেশনাল ভাবে ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করার সম্পূর্ণ পদ্ধতি সহজ ও সাবলীল ভাষায় গাইড করা রয়েছে। 

ই-কমার্স ওয়েবসাইট ডিজাইন সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন। 

তাছাড়া আপনি যদি আপনার ই-কমার্স ওয়েবসাইট একজন প্রোফেশনাল ওয়ার্ডপ্রেস এক্সপার্ট দিয়ে করাতে চান তবে meet HM Gazi Hasem! যিনি খুবই দক্ষতার সাথে ইউজার ফ্রেইন্ডলি ই-কমার্স ওয়েবসাইট ডিজাইন ওয়ার্ডপ্রেসে করে দিবে। ই-কমার্স হোক কিংবা ল্যান্ডিং পেজ ওয়েবসাইট সংক্রান্ত যেকোনো সার্ভিস সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন। 

চুড়ান্ত মন্তব্য 

আশা করছি উক্ত আর্টিকেলের মাধ্যমে কিভাবে ই-কমার্স ওয়েবসাইট ডিজাইন ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে করবেন সে বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। পাশাপাশি ওয়ার্ডপ্রেসে ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করতে শেখার উপায় ও প্রোফেশনাল হেল্প পাওয়ার বিষয়টিও বুজতে পেরেছেন। সবশেষে আপনার ব্যবসায়টিকে অনলাইনে নিয়ে আসার পদক্ষেপে শুভকামনা জানানো মাধ্যমে আর্টিকেলটি সমাপ্ত ঘটাচ্ছি, ধন্যবাদ।  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *